গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রশ্নে দেশের জনগণ কোনো আপোষ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। বাংলাদেশের নির্বাচন ও সীমান্তে নিরীহ জনগণকে হত্যায় ভারতের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’র (জেডআরএফ) উদ্যোগে ‘গণতন্ত্রের সংকট উত্তরণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান: বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনাসভায় জেডআরএফ‘র রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী সভাপতিত্বে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেডআরএফ‘র ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম।
বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের অবস্থান প্রসঙ্গ টেনে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশের চেয়ে বন্ধুরাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ১০ গুন, আয়তন ২০ গুন, সম্পদ ৫০ গুন, সামরিক শক্তি এক শ গুনেরও বেশি। তাহলে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের সমস্যা কী? এত বড় একটি রাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশ নিরাপত্তা হুমকি হতে পারে? অসম্ভব। বিএনপি বার বার বলছে, আমরা স্বাধীনতার জন্য ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ করেছি, বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছি, দেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র সহায়তা না করলে হয়তো ৯ মাসের ব্যবধানে স্বাধীন করতে পারতাম না-এটা আমরা স্পষ্ট করে বলে থাকি।
ক্রিকেটের মতো খেলাতেও পরাজিত হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ কেন উল্লাসিত হয় ভারতের নীতিনির্ধারকদের কাছে এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হয়েছে? এ দেশে একটি নির্বাচন হয়েছে। তার আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন গিয়ে বলেছে পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভে তাদের সহযোগিতা চান? এ বিষয়টি বাংলাদেশের মানুষ কথা বলেছে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো মুখ বন্ধ করে থাকে না। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বলেছে, মুঘল সম্রাটরাও বাংলাদেশের মানুষের মুখ বন্ধ করতে পারেনি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আধুনিক বিশ্বে দ্বিতীয় কোনো সীমান্ত নেই যেখানে শত শত মানুষকে গত কয়েক বছরে গুলি করে মারা হয়েছে উল্লেখ করেন মঈন খান। তিনি বলেন, ‘আজকে আধুনিক বিশ্বে হিংসাত্মক রাজনীতির মৃত্যু ঘটেছে। আমরা জানি পরাশক্তির দুইটি বিভাজন আছে, যুদ্ধ হয়, যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয় যেমন- ইউক্রেন ও গাজায় মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু আজকে যে দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সীমান্তে নিরীহ মানুষকে গুলি করে মারে, যা পৃথিবীর বর্তমান ইতিহাসে কোথাও নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করতে চাই।
আজ থেকে ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নে কোনো আপোষ করেনি, এখনও স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারে কোনো আপোষ করবে না।’জেডআরএফ’র প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, জেডআরএফ‘র প্রকৌশলী মাহবুব আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের হালিম মিয়া প্রমুখ।