ব্রিসবেন হিটের হয়ে বিগ ব্যাশের রেকর্ড বুক ওলটপালট করে দেওয়া ব্যাটারকে দিয়ে বিপিএলের উত্তাপ বাড়ানোর মতো চমক উপহার দিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির দশম আসরের সিলেট পর্বেই দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়ার বিস্ফোরক ব্যাটার জশ ব্রাউনকে। সদ্যঃসমাপ্ত বিগ ব্যাশের প্লে-অফে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে তাঁর ৪১ বলের সেঞ্চুরি আসরটির ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় হলেও এক ম্যাচে ১২ ছক্কা মারা প্রথম ব্যাটার তিনিই।
২৬ জানুয়ারি ব্রাউন এসে পৌঁছানোর আগেই বিপিএলের ঢাকা পর্বের প্রথম ধাপে মারদাঙ্গা ব্যাটিংয়ে তাঁর মতো বিদেশিদেরই জয়জয়কার।
এ ক্ষেত্রে সেরাদের ধারেকাছেও নেই তাঁদের কেউ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চাহিদানুযায়ী বেধড়ক মারের ছবিতে তাঁরা মলিন হলেও অন্য ক্ষেত্রে ঠিকই উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে আসছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। অবশ্য ঢাকায় দিনের প্রথম ম্যাচে এঁদের সেভাবে সফল না হওয়া নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা আছে। বিশেষ করে মঙ্গলবার দুপুরের রংপুর রাইডার্স-সিলেট স্ট্রাইকার্সের ম্যাচটির দিকে তাকালে সে আলোচনাকে অমূলকও মনে হবে না। এবার শুরু থেকেই প্রশংসিত হয়ে আসা মিরপুরের উইকেটে দুপুরের ম্যাচে রান করতে হলে আগে এর সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্ট’ করে নেওয়াটা জরুরি বলেই মনে করেন সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
কারণ বছরের এই সময়ে উইকেট রোদ তেমন পায়ই না বলা চলে। তবু সেদিন লো স্কোরিং ম্যাচে সিলেটের সেরা ব্যাটার দুই বিদেশি বেনি হাওয়েল ও বেন কাটিং। রান তাড়ায় চরম বিপর্যয়ে পড়া রংপুরকে জয়ের তীরে নিয়ে ভেড়ানো দুই ব্যাটারও দেশি নন—বাবর আজম ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এর আগে বহুবার বাংলাদেশে খেলে যাওয়ার অভিজ্ঞতায় বাবর জানতেন যে মিরপুরের উইকেট স্পিনারদের জন্যই সেজে থাকে। এই পাকিস্তানিও সিলেটের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামার আগে উইকেটে এবার ভিন্নতা দেখেছেন, ‘এর আগে যতবার খেলেছি, প্রতিবারই স্পিন উপযোগী উইকেটই পেয়েছি এখানে। তবে এবারের উইকেট দেখে অনেক ভালোই মনে হচ্ছে।’
ভালো উইকেটে রান করে দেখিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জও এবার দেশি ক্রিকেটারদের দিয়ে রেখেছিলেন ক্রিকেট প্রশাসকরা। তাতে যে উজ্জ্বল বিদেশিদের সঙ্গে স্থানীয়দের খুবই মলিন দেখাচ্ছে, বিষয়টি এমনও নয়। স্ট্রাইক রেটে যদিও বিদেশিদের চেয়ে অনেক পেছনে তাঁরা। তবে স্থানীয়দের এগিয়ে থাকার তথ্য-উপাত্তও আছে। মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লার বিপক্ষে ৪৪ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলার পথে বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে তিন হাজার রানের মাইলফলক পেরোনো মুশফিকুর রহিম যেমন। তিন ইনিংসে ১৪১.৮১ স্ট্রাইক রেটে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ ১৫৬ রান বরিশালের এই অভিজ্ঞ ব্যাটারেরই। দুটো ইনিংসই অবশ্য তিনি খেলেছেন কৃত্রিম আলোর নিচে। মিরপুর সন্ধ্যার পর শিশিরের কারণে বোলারদের যদিও বেশ বেগ পেতে হয়। অবশ্য একই সুবিধা তো অন্য ব্যাটারদেরও ছিল। এখানে তাই মুশফিকের কৃতিত্বকে খাটো করার সুযোগ নেই। একাদশে যিনি নিয়মিত থাকবেন না বলে এবার নেতৃত্ব পাননি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের, সেই ইমরুল কায়েসও দুই ম্যাচে ১১৮ রান করে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সেরা ব্যাটার হিসেবে মুশফিকের ঠিক পরেই আছেন। একই দলের মুস্তাফিজুর রহমান ও দুর্দান্ত ঢাকার শরিফুল ইসলাম ৫টি করে উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে শীর্ষে।