স্বপ্ন দেখে গভীর এক গর্ত খুঁড়লেন রান্নাঘরে, সেখানেই গেল প্রাণ

স্বর্ণ পাওয়ার আশায় নিজের রান্নাঘরের মেঝেতে খনন করেন ১৩০ ফুট গর্ত। কিন্তু মর্মান্তিকভাবে নিজেই সেই গর্তে পড়ে মারা যান ৭১ বছর বয়সী জোয়াও পিমেন্তা দা সিলভা। ধারণা করা হচ্ছে, ভারসাম্য হারিয়ে ওই গর্তে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস রাজ্যে।

 

সিলভার প্রতিবেশীরা জানান, জোয়াওয়ের ধারণা ছিল তাঁর এলাকার মাটির নিচে সোনা পুঁতে রাখা হয়েছে। তিনি তা বিশ্বাস করতেন এবং সোনা পাওয়ার আশায় রান্নাঘরের মেঝে খনন করে তা উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, গর্তটির ব্যাস ছিল প্রায় ৩৫ ইঞ্চি এবং জোয়াও গভীরতা হিসাবে প্রায় ১২ তলা থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গর্তের মধ্যে পিছলে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

 

ধারণা করা হচ্ছে, তখন তিনি পানি এবং কাদা পরিষ্কারের কাজ শেষে সরে আসার চেষ্টা করছিলেন। অন্য এক প্রতিবেশী জানান, জোয়াওকে স্বপ্নে এক ‘আত্মা’ বলেছিল, তাঁর রান্নাঘরের মেঝের নিচে সোনা রয়েছে। ওই ‘আত্মা’ তাঁকে গর্ত খননের বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেছিলেন।

 

আর্নালদো দা সিলভা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জোয়াও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গর্তটি খনন করেছেন।

 

খননকাজ চালানোর জন্য অনেক লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। আর্নালদো বলেন, তিনি একটি দিনে ৭০ ব্রাজিলিয়ান রেইস (১১.৩০ পাউন্ড) দিতেন কর্মীদের। তবে গর্তটি যত গভীর হয়েছে কর্মীদের মজুরি আরো বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গর্তে পড়ে তিনি একটি বড় পাথরের সঙ্গে আঘাত পেয়ে মারা যান। গর্ত খনন করতে করতে ওই পাথর বের হয়ে এসেছিল; কিন্তু সেটি অপসারণ করা কঠিন ছিল।

 

তিনি আরো বলেন, ‘এমনও গুজব ছড়িয়েছিল যে তিনি ডিনামাইট ধরানোর চেষ্টা করেছিলেন।’

 

মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৫ জানুয়ারি। অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, সেদিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে একটি ফোন পেয়েছিলেন। তখন তাঁরা জানতে পারেন, বাড়ির মালিক প্রায় ১৩০ ফুট গর্তে পড়ে গেছেন; কিন্তু তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি। পরে তাঁরা লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাঁর মাথায় আঘাত এবং পাশাপাশি পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়াসহ অন্যান্য ফ্র্যাকচার পান।

 

ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্বপ্ন দেখার পর ওই বৃদ্ধ  প্রায় ৯০ সেন্টিমিটার ব্যাসের এবং ৪০ মিটার গভীর একটি গর্ত খনন শুরু করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় কত সময় লেগেছিল বা কিভাবে এই জটিল খননকাজ করেছিলেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’ ফায়ার ব্রিগেডের সার্জেন্ট লুইস ফিলিপ ডি মিরান্ডা এস্তাদো স্থানীয় সংবাদপত্রকে বলেছেন, ‘সিলভার সম্ভবত খননের অভিজ্ঞতা ছিল এবং পেশাদার সহায়তা পেতেন। যদিও ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ঘরে তৈরি ছিল এবং উল্লম্ব টানেলটি কাটা হয়েছিল নিখুঁতভাবে।’

 

সূত্র: ডেইলি মেইল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *