প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়ায় অসহায় ঋণগ্রস্ত রিকশাচালকের মাস্টার্স পাস স্ত্রী সীমানুর খাতুনকে শিক্ষকের চাকরি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়; ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি ল্যাপটপ, ঘর মেরামতের জন্য দুই বান্ডিল টিন, ছয় হাজার টাকা এবং স্বামী ফেরদৌস মন্ডলকে ২৫ হাজার টাকার চেক দিয়ে অটোরিকশা ক্রয়ের ঋণমুক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম তাদের এসব প্রদান করেন। এতে ওই দম্পতি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের ফেরদৌস যখন বিয়ে করেন তার স্ত্রী সিমানুর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে দেওয়া কথা ফেরদৌস রেখেছিলেন। রিকশায় স্ত্রীকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে তিনি নিজে রিকশা চালিয়ে সংসারের চালান। রিকশা চালিয়ে সিমানুরের লেখাপাড়ার খরচ জুগিয়েছেন।
স্ত্রীকে এমএ পাস করিয়ে আবার স্ত্রীর জন্য চাকরি খোঁজেন রিকশা চালানোর পাশাপাশি। এ দম্পতির সংগ্রামী জীবনকথা নিয়ে একটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নজরে আসে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। সাথে বগুড়া জেলা প্রশাসককে খোঁজখবর নিতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বার্তা পেয়ে সাথে সাথে বগুড়া জেলা প্রশাসক প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম সোমবার ব্যবস্থা নিতে দেরি করেননি।
সোমবার বিকলে দম্পতিকে ডেকে সব কথা শোনেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসার পর ভাগ্য বদলে যায় প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারটির। রিকশাচালক ফেরদৌস মন্ডললের স্ত্রী এখন বগুড়ার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষক। চাকরির সঙ্গে মিলেছে সিমানুরের স্বামী রিকশা চালক ফরদৌস মন্ডলের রিকশাা কেনার ঋণ পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বাড়ি সংস্কারের টিন ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে রিকশা চালকের উচ্চশিক্ষিত স্ত্রী যেন শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তিতে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য পেলেন একটি ল্যাপটপ।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এসবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়।
সোমবার সিমানুরের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে তিনি স্কুলে গিয়ে সহকারী স্কুল শিক্ষক পদে যোগদান করেন। রিকশা চালক ফেরদৌস মন্ডললের স্ত্রী এখন বগুড়ার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষক। এখন সিমানুর উৎসাহ আরো বেড়ে গেছে। চাকরির পাশাপাশি তিনি এখন বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে চান। তিনি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা কৃতজ্ঞতার কথা পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান।