কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প শেষ হলেও প্রায় আট কিলোমিটার অংশে এখনো দুই লেন রয়ে গেছে। এতে আগের মতো যানজট লেগে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লা বলছে, ভূমি অধিগ্রহণে স্থানীয় লোকজনের বাধা ও ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে মামলার কারণে ওই আট কিলোমিটার অংশে কাজ শুরু করা যায়নি। জটিলতার সমাধান হলে নতুন প্রকল্প নিয়ে ওই অংশের কাজ করতে হবে।
সওজ কুমিল্লা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে কুমিল্লা হয়ে নোয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য এলাকায় যাত্রী পরিবহন সহজ করতে ও যানজটের ভোগান্তি কমিয়ে আনতে ২০১৮ সালে এই মহাসড়ক চার লেন করার প্রকল্প নেওয়া হয়। এ জন্য দুই হাজার ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরে কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কটির চার লেনের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পাঁচ বছর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ করেছে সওজ। তবে এখনো বাকি ৭.৯ কিলোমিটার অংশের কাজ।
সওজের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রকল্পের শুরু থেকে ৫৯ কিলোমিটারের মধ্যে কুমিল্লা অংশে লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজারের (বাইপাস এলাকা) ৪.৫ কিলোমিটার, লালমাই উপজেলার শানিচোঁ এলাকার ১.৮ কিলোমিটার ও বাগমারা বাজার এলাকার ১.৬ কিলোমিটার স্থানে প্রকল্পের কাজ আটকে যায়।
বর্তমানে ওই ৭.৯ কিলোমিটার অংশে আগের মতো দুই লেনে যানবাহন চলাচল করছে।
এতে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের লালমাইয়ের বাগমারা বাজার, শানিচোঁ বাজার ও লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার এলাকায় (বাইপাস এলাকা) প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে গাড়ির চালক ও যাত্রীরা।
সওজ বিভাগ, কুমিল্লার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, চার লেন প্রকল্পের আওতায় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া তিনটি এলাকার মধ্যে বাগমারা বাজার এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়তে হয় সড়ক বিভাগকে। প্রকল্প চলমান থাকা অবস্থায় জনসাধারণের আপত্তি থাকায় সেখানে ভূমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। শানিচোঁ-কাকসার মৌজায় ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণসংক্রান্ত মামলা ও লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় এসব অংশে চার লেন করা যায়নি।
তিনি জানান, বাগমারা অংশের জটিলতা সমাধানের পথে। তবে প্রকল্পটি যেহেতু শেষ হয়েছে, কাজেই আগের প্রকল্পের আওতায় কাজ করা যাবে না। লাকসামের দৌলতগঞ্জ ও লালমাইয়ের শানিচোঁ এলাকার জটিলতা শেষ হওয়ার পর একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া তিনটি স্থানের জন্য নতুন করে আবার প্রকল্প দিতে হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা জানান, জটিলতা কাটলে অসমাপ্ত অংশে কাজ শুরু করা যাবে। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।