বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ সংঘর্ষ ও নির্যাতন, শাস্তি মাত্র একটির

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু ২০১২ সালে। শুরু থেকেই এখানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। তবে ২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে কিছু শিক্ষার্থী সংগঠনটির কর্মী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় হন। গত পাঁচ বছরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের কোন্দলকে কেন্দ্র করে অন্তত ২১টি সংঘর্ষ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। 
এসব ঘটনায় অন্তত ১৫টি তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে একটি ছাড়া কোনো ঘটনায় কারো শাস্তির নজির নেই। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগ কর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কর্মী। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলসহ কোনো ছাত্রসংগঠনেরই কমিটি নেই।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১২ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুকুল আহমেদকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়া হয়।২০১৯ সালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দুই দফায় সংঘর্ষে দুজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী আল সামাদ ও তাহমিদ জামানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে প্রশাসন। কয়েক দিন পর তাহমিদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এটাই এখন পর্যন্ত শাস্তির নজির। 
ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা বলছেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী পরিচয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা ২০১৮ সালে ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন। মেয়রের অনুসারী পক্ষটির নেতৃত্বে ছিলেন মহিউদ্দীন আহমেদ ওরফে সিফাত, আলীম সালেহীসহ কয়েকজন। ২০২১ সালের আগস্টের পর বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী হিসেবে আরেকটি পক্ষ ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয়। ২০২২ সালের ৫ জুলাই রাতে এই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। গত ২৫ জানুয়ারি শেরেবাংলা হলে মহিউদ্দীনকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সমঝোতা অনুযায়ী একটি পক্ষ শেরেবাংলা এবং অন্য পক্ষ বঙ্গবন্ধু হল নিয়ন্ত্রণ করছে।ছাত্রলীগ নেতারা জানান, পাঁচ বছরে ছাত্রলীগের সংঘাতের ঘটনায় বন্দর থানা ও কোতোয়ালি থানায় অন্তত ১৫টি মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীরা। একটি মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। দুটি মামলা মীমাংসা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম বলেন, মামলাগুলো এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে এই মুহূর্তে তাঁর জানা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *