দাম কমেছে, পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে ভারত

গত ৮ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

 

ভারতের খুচরা ও পাইকারি বাজারে গড়ে ৩০ শতাংশ কমেছে পেঁয়াজের দাম, তাই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে দেশটির সরকার। এক সরকারি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এমন তথ্য দিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক মাসে ভারতের খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৩০ শতাংশ, আর পাইকারি বাজারে কমেছে ৩৫ শতাংশ। তাই পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

 

ওই সরকারি কর্মকর্তা ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, ‘ভারতের মূল উৎপাদনকেন্দ্রগুলোতে পেঁয়াজের দাম অনেকটা কমে গেছে। সে জন্য সরকার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার চিন্তা করছে।’ যদিও আগে বলা হয়েছিল, পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকবে।

 

গত ৮ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

 

মূলত দেশটিতে গত বছর পেঁয়াজ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিসেম্বরের আগের তিন মাসে দেশটির বাজারে এই পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এর পর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

 

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে ভারতের বাজারে দাম কমতে শুরু করে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই সপ্তাহে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে হয়েছে প্রতি কেজি ৩৯ রুপি।

 

অথচ এক মাস আগেও দাম ছিল প্রতি কেজি ৫৯ রুপি। একইভাবে পাইকারি বাজারেও কমেছে দাম। বর্তমানে গড়ে প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজের দাম তিন হাজার ১৩৭ রুপি। এক মাস আগে যেখানে দাম ছিল চার হাজার ৮৮৫ রুপি। নিষেধাজ্ঞার পর মহারাষ্ট্রের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ৬০ শতাংশ কমেছিল।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূলত নতুন খরিফ পেঁয়াজ বাজারে আসায় দাম এভাবে কমছে। এখন প্রতিদিন ১৫ হাজার কুইন্টাল খরিফ পেঁয়াজ বাজারে আসছে। রবিশস্যের তুলনায় খরিফ শস্যের মেয়াদ কম। সে জন্য এই পেঁয়াজ খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, তাঁরা চান না যে দাম খুব বেশি পড়ে যাক। ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বিশ্ববাজারে ভারত রপ্তানিকারক হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায় এবং যেসব দেশের সঙ্গে এরই মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তার প্রতি সম্মানও দেখাতে চায়। ভারতের পেঁয়াজের প্রধান আমদানিকারকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও নেপাল। 

২০২৩ সালে মহারাষ্ট্রে অসময়ে ভারি বৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। শুধু পেঁয়াজ নয়, গত বছর ভারতের বাজারে টমেটোর দামও অনেক বেড়ে যায়, এমনকি কেজিতে তা ২০০ রুপি পর্যন্ত উঠে যায়। এক পর্যায়ে দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটে। পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। তখন এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এমনকি তাঁরা ধর্মঘটও করেন। এরপর রপ্তানির ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।

 

সূত্র : ইকোনমিক টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *