নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের প্রথমবার ওয়ানডেতে হারল বাংলাদেশ।

নেপিয়ারের সকালটা নিজেদের নামে লিখে ছন্দটা বুনে দিয়েছিলেন বোলাররা। আরো নির্দিষ্ট করে বললে পেসাররা। সে পথে হেঁটে বাকি অনুষ্ঠানিকতা সারলেন ব্যাটাররা। তাতেই এলো ঐতিহাসিক জয়।

 

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের প্রথমবার ওয়ানডেতে হারল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে তিন ম্যাচ সিরিজে ধবলধোলাই আড়ালেন নাজমুল হোসেনরা।

০-১৮! কিউইদের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠে এমন পরিসংখ্যান নিয়ে খেলতে নেমে এবার কাঙ্ক্ষিত জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। মুখোমুখি দেখায় নিউজিল্যান্ডকে সর্বনিম্ন ৯৮ রানে গুটিয়ে ১ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

 

৯ উইকেট ও ২০৯ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়টি বল ও উইকেটের ব্যবধানে কিউইদের বিপক্ষে সব থেকে বড় জয় বাংলাদেশের।

ছোট রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ডান চোখে সমস্যা অনুভব করছিলেন সৌম্য সরকার। তার অঙ্গভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছিল, ঠিকঠাক দেখতে পাচ্ছিলেন না।

ফিজিওর প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। ১৬ বলে ৪ রান করে উঠেই যান সৌম্য। তবে বড় জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে।

 

ওপেনার এনামুল হক ৭ চারের সাহায্যে ৩৩ বলে ৩৭ রানে আউট হলেও ফিফটি করা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৪২ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংসে নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক এক জয়ে ২০২৩ সালের ওয়ানডে সংস্করণের খাতা বন্ধ করল বাংলাদেশ। যদিও সিরিজটি ১-২ ব্যবধানে হারতে হয়েছে।

 

সফরকারীরা জয়ের ভিত পেয়ে যায় বোলারদের হাত ধরে। আরো নির্দিষ্ট করলে বললে পেসারদের সৌজন্যে। নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষের সবগুলো উইকেট নেন বাংলাদেশি পেসাররা। যেখানে ৭ ওভারে দুই মেডেনসহ ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তানজিম হাসানের। সৌম্য ৬ ওভারে ১ মেডেন দিয়ে ১৬ রানে নেন ৩ উইকেট। ৭ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। বাকি ১ উইকেট মুস্তাফিজুর রহমানের।

 

নেপিয়ারে আদর্শ পেস সহায়ক উইকেট ব্যবহারে আজ দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন তানজিদ-শরিফুলরা। কিউইদের টপ অর্ডারে আঘাত করে তানজিদ। নতুন বল পেয়ে ফেরান ৮ রান করা ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ও তিনে নেমে ১ রান করা হেনরি নিকোলসকে। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং। কিন্তু এই জুটি ৩৬ রানের বেশি বাড়তে দেননি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৪তম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট নেওয়া শরিফুল।

 

বল একটু পুরনো হলে নিজের দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে ইনিংসের ১৭তম ওভারে ল্যাথাম, ১৯তম ওভারে উইল ইয়াং ও ২১তম ওভারে মার্ক চাপম্যানকে আউট করেন শরিফুল। ল্যাথাম ২১, উইল ২৬ ও চাপম্যান ফেরেন ২ রান করে। দুই পেসারের হাত ধরে ২৫ ওভারের আগেই ৬ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। বাকি কাজটা করেন সৌম্য। কিইউদের নিচের দিকের ব্যাটারকে খোলস থেকে বের হতে দেননি তিনি। এতেই অষ্টমবারের মতো ১০০-এর নিচে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার।

 

বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, ছোট লক্ষ্য ভীতি ছড়ায় বেশি। তবে বাংলাদেশি পেসাররা যেখানে তাণ্ডব চালিয়েছেন, সেই একই উইকেটে নিউজিল্যান্ডের পেসারদের হতাশায় উপহার দিয়ে ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *