বিতর্কিত লাল কার্ডে কিংসের স্বপ্নভঙ্গ

 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল হয়নি। কিন্তু যা হয় তা গোল হজমের চেয়েও কম ছিল না বসুন্ধরা কিংসের জন্য। একটা ফাউলে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় কিংস মিডফিল্ডার আসরর গফুরভকে। প্রথমার্ধের পুরো সময় দারুণ লড়ে ম্যাচ যখন গোলশূন্য, তখন এই বিতর্কিত কার্ড বজ্রপাত হয়ে পড়ে কিংসের ওপর।

১০ জনের দল নিয়ে পরের অর্ধের পুরোটা সময়ে শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি কিংস ওড়িশার ঘরের মাঠের এ ম্যাচটিতে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একটা কর্নার হেডে কাজে লাগিয়ে মুর্তাদা ফল ওড়িশাকে এগিয়ে দিলে সেটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হয়ে যায়। আসলে ওই কার্ডটিই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হওয়ার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে কিংসের সামনে। এ ম্যাচে হার এড়ালেই চলত বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নদের দল।

কিন্তু একজন কম নিয়ে খেলে শেষ পর্যন্ত সেই সমতাটা আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি তাদের।
চোট কাটিয়ে এ ম্যাচে রবসন রোবিনহো ফিরেছিলেন। ওড়িশার বিপক্ষে আগের ম্যাচটায় ছয় ছয়টি সুযোগ তৈরি করেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান। যা শুধু ওই ম্যাচ না, এএফসি কাপে সেদিন যতগুলো (দ্বিতীয় ম্যাচ ডে) ম্যাচ হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ।

তবে রোবিনহো গতকাল তাঁর পায়ের জাদু দেখানোর আগেই ওড়িশা তাদের প্রেসিং ফুটবলে কিংস শিবিরে কাঁপন ধরায়। তারিক কাজীকে শুরুতেই একটা বিপজ্জনক বল ক্লিয়ার করতে হয় জেরি মাউইমিঙ্গাথার সামনে থেকে। এর মিনিট দুই পর সিওয়াই গোডার্ডের ক্রসে ডিয়েগো মরিসিও অল্পের জন্য বল পাননি। পেলে বিপদ হতো। তারিক আবার একটা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে বক্সের ওপর প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের পায়েই তুলে দিয়েছিলেন।

ভাগ্য ভালো সেটিতেও কোনো বিপদ হয়নি। রয় কৃষ্ণার দারুণ ক্রস আরেকবার কাজে লাগাতে পারেননি জেরি। ওড়িশার চাপ সামলে কিংসও বার কয়েক ওপরে উঠতে চেয়েছে। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে কোনো ভয় ধরাতে পারেনি। প্রথম আধাঘণ্টায় ওড়িশা বল দখলে এগিয়ে ছিল ৬০-৪০-এ। তাদের ছয় শটের বদলে কিংসের শট মাত্র একটি।

দ্বিতীয়ার্ধের শেষ মিনিট পনেরো চাপটা অবশ্য ধরেও রাখতে পারেনি ওড়িশা। কিংস এ সময়ে বলের দখল বাড়ালেও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু বিরতির আগমুহূর্তে ওই লাল কার্ড ছিল কল্পনার বাইরে। গফুরভের চ্যালেঞ্জটা দুই পায়েও ছিল না, অথচ ম্যাচের ওই মুহূর্তে রেফারি কিংস মিডফিল্ডারকে কিনা দেখালেন সরাসরি লাল কার্ড। স্বাভাবিকভাবেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে কিংস। বিরতির বাঁশির পর অস্কার ব্রুজোন প্রতিবাদ জানাতে জানাতে টানেল পর্যন্ত গিয়েছেন। কিন্তু যা হওয়ার হয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমার্ধের শুরুর মতোই চাপ ধরে রেখে খেলে স্বাগতিক ওড়িশা। তবে এই চাপ আর গফুরভের লাল কার্ড ভুলিয়ে দিতে পারতেন দরিয়েলতন গোমেজ, মিনিটে পাঁচেকের মধ্যেই তিনি যে সুযোগটা পেয়েছিলেন সেটা কাজে লাগাতে পারলে। কিন্তু মিগেলের বাড়ানো বলে ওড়িশা ডিফেন্ডারকে ডজে কাটিয়েও বল পোস্টে রাখতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। অন্য প্রান্তে ওড়িশা কিন্তু বারবার চেষ্টার সেই গোলটা পেয়ে যায়। কর্নার থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেছেন মুর্তাদা। গোলরক্ষক মেহেদী হাসান এই ম্যাচে আস্থা নিয়ে খেললেও ওই হেডে তাঁর করার ছিল না কিছু।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *