যে কারণে আইসিসি থেকে বরখাস্ত করল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট টিমকে

মাঠের পারফরম্যান্সে দিশেহারা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট। বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করে ইতোমধ্যে দেশটির ক্রিকেটাররা বাড়িতে ফিরে গেছেন। এরই মধ্যে আরও বড় দুঃসংবাদ পেল ১৯৯৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডে (এসএলসি) সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসি তাদের সদসপদ্য বাতিল করেছে। যদিও নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর দেশটির ক্রিকেট কীভাবে চলবে, সেই নির্দেশনা কিংবা শর্ত এখনও আরোপা করেনি আইসিসি।

আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে আইসিসি বলছে, ‘আইসিসি বোর্ড সভায় আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।’

এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী বছরের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা। এছাড়া আগামী গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচে টেস্ট সিরিজও রয়েছে লঙ্কানদের। সবমিলিয়ে পূর্বনির্ধারিত সব সূচি নিয়ে এখনই দোটানায় পড়তে যাচ্ছে দলটি।

আইসিসির বিবৃতিতে লঙ্কান বোর্ডের নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বলছে— তারা গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে সরকারি হস্তক্ষেপ একটি। এছাড়া লঙ্কান বোর্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক লেনদেনে অস্বচ্ছতারও অভিযোগ রয়েছে। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ ও অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টের আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল এসএলসি ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের। যা নিয়ে এসএলসির গভর্নিং বডিকে ‘‘বিশ্বাসঘাতক এবং দুর্নীতিবাজ’’ বলে পদত্যাগেরও দাবি জানান ক্রীড়ামন্ত্রী রোশন রানাসিংহে। তার সমালোচনার জবাবে পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড অফিশিয়ালরাও। তবে এবার বিশ্বকাপ দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে সেই পরিস্থিতি বদলে যায়।

সেই ধারাবাহিকতায় গত ৬ নভেম্বর পুরো ক্রিকেট বোর্ড বরখাস্তকেই বরখাস্ত করে দেয় মন্ত্রণালয়। বলে রাখা ভালো— শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী অন্য খেলার মতো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকবে এসএলসি। কিন্তু আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডে সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না। যে কারণে চাইলেও খুব একটা প্রভাব দেখাতে পারে না মন্ত্রণালয়। তাই ২০১৪ সালে নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন এক কমিটি গড়েছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। তখন আইসিসি শ্রীলঙ্কার প্রাপ্য অর্থ প্রদান স্থগিত করেছিল।

লঙ্কান বোর্ডের এই নিষেধাজ্ঞার চার বছর আগে আরও একটি পূর্ণ সদস্য দেশকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আইসিসি। ২০১৯ সালে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডকেও সেই খড়গে পড়তে হয়েছিল। এরপর থেকে তাদের আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তবে আইসিসি লঙ্কানদের ক্ষেত্রে কিছুটা বুঝে-শুনে সিদ্ধান্ত নিতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *