নির্বাচন নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলেছে মনে হচ্ছে না

এম হুমায়ুন কবির

এম হুমায়ুন কবির

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে (২ +২) আলোচনা শেষে প্রচারিত যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ নেই। ফলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ঐকমত্য হয়নি, সেটা পুরোপুরি স্পষ্ট। দুই দেশের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনার পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লির অবস্থান আবারও স্পষ্ট করেছেন। নিকট প্রতিবেশী বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি কী, সেটা কিছু শব্দে খুব পরিষ্কার।

 

বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’, ‘স্থিতিশীলতা’, ‘শান্তিপূর্ণ’ এই শব্দগুলোর পাশাপাশি একটি ‘প্রগতিশীল’ দেশ নিয়ে ভারত তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা স্পষ্ট করেই তুলে ধরেছে। কোনো রকম রাখঢাক ছাড়াই বাংলাদেশ নিয়ে ভারত তাদের অগ্রাধিকার কোথায়, সেটা জানিয়ে দিয়েছে।

 

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় কী বলেছে, সেটা আমাদের জানা নেই। তার অর্থ হতে পারে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দ্বিমত আছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সম্প্রতি বলেছিলেন, বাংলাদেশ নিয়ে ভারত তাদের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে।

 

আর যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশ নিয়ে তাদের অবস্থান ভারতকে জানিয়েছে। ফলে দিল্লির সর্বশেষ বৈঠকে দুই দেশের অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

 

এটা অনস্বীকার্য যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে (২ +২) আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেয়েছে। সেখানে আইপিএস (ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল কৌশল), চীন, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপের মতো প্রসঙ্গগুলো এসেছে। অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সংযুক্তির বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন। এ বিষয়গুলোতে দুই পক্ষের আগ্রহ রয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানটি আন্তর্জাতিক এবং ভারতের অবস্থানটি আঞ্চলিক মনোযোগের প্রেক্ষিতে বিবেচনায় নিতে হবে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম অগ্রাধিকার। ফলে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে একটা ইতিবাচক বিবর্তন হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় দুই দশক ধরে ভারতের সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে। তাই স্থিতিশীলতাকেই ভারত প্রাধান্য দিচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *