যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে না, এটা যুদ্ধের সময় : নেতানিয়াহু

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় সোমবার ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নিয়ে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে না এবং হামাসকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি। হামাসকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান।

ইসরায়েলি নেতা নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই বন্দিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বন্দিদের মধ্যে ৩৩ জন শিশু ছিল এবং হামাস তাদের জিম্মি করে রাখছে। পার্ল হারবারে বোমা হামলার পর বা ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়নি, তেমনি ইসরায়েলও ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলার পর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করবে না।’ বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির আহ্বানের অর্থ হামাসের কাছে ইসরায়েলের আত্মসমর্পণ, সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণ, বর্বরতার কাছে আত্মসমর্পণ। এটা ঘটবে না।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল এই যুদ্ধে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করবে। গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রোধে সেনাবাহিনী তার পথ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।

’ বাইবেলের কথা উল্লেখ করে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বাইবেলে বলা হয়েছে, শান্তির একটি সময় আছে এবং যুদ্ধেরও একটি সময় আছে। এখন যুদ্ধের সময়।’
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের প্রাণঘাতী হামলায় এক হাজার ৪০০ জন নিহত এবং ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলায় কমপক্ষে আট হাজার ৩০৬ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। এদিকে সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলেকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস জানিয়েছেন, ‘গাজার বেসামরিক মানুষ আমাদের শত্রু নয়।

আমাদের লক্ষ্য হামাস। ওই অঞ্চলের বেসামরিক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন ছিল, আমরা তার সবটাই করেছি।’ তবে নেতানিয়াহুর মতোই তিনিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আপাতত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কোনো সম্ভাবনাই নেই। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হবে।জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক ত্রাণ সংস্থার প্রধান নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইসরায়েলের মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছেন। ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, ‘হামাসকে শাস্তি দিতে গিয়ে ইসরায়েল সার্বিক শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। সাধারণ বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।’ গাজায় এখন কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজা থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেওয়ার পরেই তাদের ট্যাংক এবং স্থলসেনা গাজায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যেভাবে ইসরায়েলের সেনা গাজায় আক্রমণ চালাচ্ছে, তাতে গাজা স্ট্রিপের কোনো জায়গাই এখন আর নিরাপদ নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *