ইসরায়েল ও হামাস এ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত যে, ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ের সময় এক মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি হবে। তবে গাজা যুদ্ধ কীভাবে স্থায়ীভাবে শেষ করা যায়, তা নিয়ে উভয় পক্ষের মতপার্থক্যের কারণে পরিকল্পনাটি আটকে রয়েছে বলে তিনটি সূত্র জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কাতার, ওয়াশিংটন এবং মিসরের নেতৃত্বে মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছে। ইসরায়েলি জিম্মিদের কীভাবে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে, তা এই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক থেকে শুরু হবে এবং ইসরায়েলি সৈন্য দিয়ে শেষ হবে, বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তিসহ আরো অনেক কিছু থাকবে।
এই শাটল ডিপ্লোম্যাসির (মধ্যস্থতা) সর্বশেষ ধাপ গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল। হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার পর, প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্বকাল নিয়ে মতানৈক্য হলে তা প্রায় ৩০ দিনে ঠেকেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। একজন কর্মকর্তা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পর এই তথ্য জানায়।
ছয়টি সূত্র অনুসারে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যত শর্তে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত হামাস পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে রাজি নয়। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবেদনশীল বিষয় হওয়ার কারণে বেশিরভাগ সূত্র নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছে। মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল কোনো পর্যায় বা ধাপ ছাড়াই আলোচনা চালিয়ে যেতে চাইছে, সেখানে হামাস চাইছে একটি ‘প্যাকেজ চুক্তি।’ যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে হবে।
আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি গত সোমবার রয়টার্সকে বলেন, ‘এখনও কোনো চুক্তি হয়নি। তিনি আরো বলেন, “আমরা সকল উদ্যোগ এবং প্রস্তাবের জন্য উন্মুক্ত, তবে যেকোন চুক্তি অবশ্যই গাজা উপত্যকা থেকে আগ্রাসন এবং দখলদারিত্ব সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ওপর ভিত্তি করে হতে হবে।”
এদিকে সপ্তম একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের একটি প্রস্তাব হলো, যুদ্ধ শেষ করে হামাস যেনো গাজা থেকে ছয় জেষ্ঠ্য নেতাকে সরিয়ে নেয়। হামাসের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।’ সূত্রটি বলেছে, ওই জেষ্ঠ্য নেতাদের তালিকায় ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবর হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং মোহাম্মদ আল-দেইফের নাম রয়েছে। তবে রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি সূত্রের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পারেনি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সব ধরনের প্রস্তাব বা আলোচনার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র: রয়টার্স