খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টায় লোকজন।
পঞ্চগড়ে আবারো শুরু হয়েছে পৌষের শীতের দাপট। তাপমাত্রা কমে আসার পাশাপাশি কুয়াশা আর উত্তরে ঠাণ্ডা বাতাসে প্রান্তিক জেলাটির জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। রাত দিন বিরামহীনভাবে বয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বুধবার এই মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে। মঙ্গলবার ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ে শীত এসেছে একটু দেরিতে। অন্য বছরগুলোতে শরতেই শীতের দেখা মিললেও এবার শীতের দেখা মিলেছে ঠিক পৌষের শুরুতে।
তারপরও শীতের রুদ্রমূর্তি দেখা মিলছিল না। রবিবার রাত থেকে উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাসের পরিমাণ বাড়ায় জেঁকে বসেছে শীত। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে পথঘাট। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহনগুলো।
এদিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় অনেকে কষ্টে রাত কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড় ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রাম এলাকায় শীতের তীব্রতা একটু বেশি। রাত ৯ টার মধ্যেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
ভ্যানচালক আব্দুল গফুর বলেন, ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে কঠিন ঠাণ্ডা লাগতেছে। সকালে বের হলে হাত পা অবশ হয়ে আসে। তারপরও জীবিকার তাগিদে আমাদের ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়।
পাথর শ্রমিক আবুল হোসেন বলেন, আমাদের অন্য কোনো কাজ না থাকায় এই কষ্টের জীবিকা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি। বরফের মতো ঠাণ্ডা পানিতে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে। বেশিক্ষণ টেকা যায় না। পাড়ে উঠে আগুনে হাত পা শেকে আবার নদীতে নামি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, বুধবার এই মৌসুমের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এখন ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।