ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরুদ্দোজ্জা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে ৭ জানুয়ারির পর নাসিরনগরে পা রাখতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেত্রী রোমা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রোমা আক্তারকে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।ওই সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ রেজাউল হক শনিবার বিকেলে এ বিষয়ে শোকজ করেন।
অনুসন্ধান কমিটির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোমা আক্তারের দেওয়া বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়।
গত বুধবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী সভা থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও হাতে আসে। সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। রোমা আক্তার কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নাজির মিয়ার স্ত্রী।
ভিডিওতে রোমা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নাসিরনগরের মানুষ সহজ-সরল মানুষ। দাঙ্গা-হাঙ্গামা চাই না। আমাদের নেতৃবৃন্দ যে জেল খেটেছেন, সেটা আমাদের কলঙ্ক। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন, ভোট দিয়ে অধিকার ছিনিয়ে নেবেন। উনি যে বেইজ্জতি করেছেন, তার জন্য ধিক্কার জানাই। তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হয়রানি করেছেন।
উনি নাসিরনগর এসেছেন প্রবীণ নেতৃবৃন্দের নাম মুছে ফেলার জন্য। আরে নাম মুছে ফেলা এত সহজ নয়। এটা কাগজে লেখা নাম নয়। মানুষের হৃদয়ে লেখা নাম মুছে ফেলতে পারবেন না। তবে আপনার নাম কেন, ৭ তারিখের পর নাসিরনগরের মাটিতে আমরা আপনাকে আমরা পা রাখতে দেব না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সংগ্রাম হটাও নাসিরনগর বাঁচাও। আমি মনোনয়ন চেয়েও পাইনি। আমাদের সকলের মনের আশা উনি (একরামুজ্জামান) পূরণ করবেন।’ রোমা আক্তার তাঁর বক্তব্যে একরামুজ্জামানের কলার ছড়ি প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
এর আগে নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি দেওয়ায় অভিযোগে সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মো. ফরাহদ হোসেনকে ‘তলব’ করেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। গত ২৩ ডিসেম্বর দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘চেয়ারম্যানের নাম মুছে দিতে চান এমপি, হাত ভাঙার হুমকি আ. লীগ নেতার’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হলে সেটির সূত্র ধরে তাঁকে তলব করা হয়।
পরে সশরীরে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে হাজির হয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানার অঙ্গীকার করেন এবং অভিযোগ অস্বীকার করেন।